এসো হাদীস থেকে শিখি

দ্বীনের দাঈগণের অবশ্য করণীয়ঃ-
*****************-******************
পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি। আল্লাহ তাআলা মানুষকে তার প্রতিনিধিত্ব তথা ইবাদত-বন্দেগি করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে তার বিধান বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন এবং গোমরাহী থেকে বেঁচে থাকতে সতর্ক করেছেন।
আল্লাহ তাআলার প্রদত্ত দায়িত্ব পালনে নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে। বিশেষ করে যারা দ্বীনের দাওয়াত মানুষের কাছে পৌঁছাবেন, তাদেরকে দ্বীনের যথাযথ যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। সব ধরনের অন্যায় কাজ থেকে নিজেদেরকে আগে শোধরাতে হবে।
নিজেকে সৎ কাজের জন্য নিবেদিতপ্রাণ করে গড়ে তুলতে হবে। খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ নিজে সঠিক না চললে অন্যকে সঠিক পথ দেখানো সম্ভব হবে না। ফলপ্রসু ও হবেনা।

দ্বীনের দায়ীকে যেমন হতে হবেঃ-
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর কাছে একদিন এক ব্যক্তি এসে বলল, ‘আমি দ্বীনের দাওয়াতি কাজ করতে চাই।’ হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘তুমি যদি নিজেকে কুরআনের ৩টি আয়াতের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে পার; এবং তাতে অপমানিত হওয়ার কোনো আশংকা না থাকে তবে তুমি দ্বীনের দাওয়াতি কাজ করতে পার।’
কুরআনের প্রথম আয়াত;

﴿ اَتَاۡمُرُوۡنَ النَّاسَ بِالۡبِرِّ وَتَنۡسَوۡنَ اَنۡفُسَكُمۡ وَاَنۡتُمۡ تَتۡلُوۡنَ الۡكِتٰبَ‌ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ﴾
তোমরা অন্যদের সৎকর্মশীলতার পথ অবলম্বন করতে বলো কিন্তু নিজেদের কথা ভুলে যাও। অথচ তোমরা কিতাব পাঠ করে থাকো। তোমরা কি জ্ঞান বুদ্ধি একটুও কাজে লাগাও না?
(সূরা বাক্বারাহ, আয়াত ৪৪)

কুরআনের দ্বিতীয় আয়াত;
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ﴾
২) হে মু’মিনগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল যা নিজেরা করো না?’
(সুরা সফ : আয়াত ০২)।

কুরআনের তৃতীয় আয়াত;
﴿قَالَ يَا قَوْمِ... وَمَا أُرِيدُ أَنْ أُخَالِفَكُمْ إِلَى مَا أَنْهَاكُمْ عَنْهُ إِنْ أُرِيدُ إِلاَّ الإِصْلاَحَ مَا اسْتَطَعْتُ وَمَا تَوْفِيقِي إِلاَّ بِاللّهِ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيب﴾...
(হজরত শোয়াইব আলাইহিস সালাম নিজ জাতির উদ্দেশ্যে বলেছিলেন,)
আর যেসব বিষয় থেকে আমি তোমাদের বিরত রাখতে চাই আমি নিজে কখনো সেগুলোতে লিপ্ত হতে চাই না।৯৯ আমি তো আমার সাধ্য অনুযায়ী সংশোধন করতে চাই। যা কিছু আমি করতে চাই তা সবই আল্লাহর তাওফীকের ওপর নির্ভর করে। তাঁরই ওপর আমি ভরসা করেছি এবং সব ব্যাপারে তাঁরই দিকে রুজু করি।
(সুরা হুদ : আয়াত ৮৮)
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু উল্লেখিত ৩টি আয়াতের ব্যাপারে দ্বীনের দাওয়াত প্রদানকারী আগ্রহী ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করেন,
‘এ আয়াতগুলোর ওপর কি তুমি আমল করেছ? ওই ব্যক্তি বলল, ‘না’।
তখন হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘যাও! আগে নিজেকে সৎকাজের আদেশ দাও এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখ।’
পরিশেষে...
দ্বীনের দাওয়াতি কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে হলে, আগে নিজেকে তৈরি করতে হবে; আল্লাহর পথে ও মতে নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে। অন্যায় ও অসত্য থেকে বিরত থাকতে হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দ্বীনের দাওয়াত দানকারীগণকে কুরআনের উল্লেখিত ৩টি আয়াতের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Comments