খেজুর আল্লাহর বিশেষ নেয়ামতঃ-
***********************************************
মহাগ্রন্থ আল কুরআন সমুদয় জ্ঞানের মূল উৎস। মহান আল্লাহ চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতো এতো গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কেও অত্যন্ত নিখুঁতভাবে সুসজ্জিত করেছেন। এর অন্যতম এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে খেজুর।
পৃথিবীতে প্রায় চার’শরও অধিক প্রজাতির খেজুর রয়েছে। আরব দেশগুলোতে এই খেজুরের উৎপাদন বেশী হয়। ভারত পাকিস্তানে বাণিজ্যিকভাবে খেজুরের চাষ হয়। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশে খেজুরের চাষ শুরু হয়েছে। পবিত্র কুরআন ও হাদীসে বারবার খেজুরের আলোচনা এসেছে।
মারইয়াম (আ.) যখন প্রসব-বেদনায় কাতর হয়ে যান, সে সময়ে তিনি খেজুর গাছের নিচে অবস্থান করছিলেন, তখন আল্লাহ তাকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘তুমি এ খেজুর গাছের কাণ্ড তোমার দিকে নাড়া দাও, (দেখবে) তা তোমার ওপর পাকা ও তাজা খেজুর ফেলছে।’ -সূরা মারইয়াম, আয়াত: ২৫
সা‘দ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি- যে ব্যক্তি ভোরে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন কোন বিষ ও যাদু-টোনা তার ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারী, হাদীস নং : ৫৪৪৫)
আলোচ্য হাদীসের ব্যাখায় ইমাম খত্ত্বাবী (রহ.) বলেন, ‘আজওয়াহ্ খেজুর খেলে বিষ বা যাদু ক্ষতি করতে পারে না, এটা শুধুমাত্র নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দুআর বারাকাতের কারণে। নচেৎ খেজুরের মধ্যে আলাদা কোন বৈশিষ্ট্য নেই। (আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৮৭২)
আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত অন্য হাদীসে এসেছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মদীনার উচ্চভূমির ‘আজওয়াহ্ খেজুরের মধ্যে রোগের নিরাময় রয়েছে। আর প্রথম ভোরে তা (খাওয়া) বিষের প্রতিষেধক। (সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্, হাদীস নং: ৩৫৩৯)
ইমাম ত্বীবী (রহ.) বলেন, তা বিষ মুক্তির ক্ষেত্রে উপকারী। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২০৪৭)
রোগপ্রতিরোধে খেজুরের কার্যকরীতা।
আজ থেকে প্রায় সাড়ে চৌদ্দশত বছর পূর্বে প্রিয়নবী (স.) এই মহাগুণ সমৃদ্ধ ফল খেজুর খেতে বিপুল উৎসাহিত করেছেন। আজকের দিনে চিকিৎসাবিজ্ঞান ও খেজুরের খাদ্যগুণ সম্বন্ধে চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছে।
রোযায় অনেকক্ষণ খালি পেটে থাকা হয় বলে দেহের প্রচুর গ্লুকোজের দরকার হয়। খেজুরে অনেক গ্লুকোজ থাকায় এ ঘাটতি পূরণ হয়।
হৃদরোগীদের জন্যও খেজুর বেশ উপকারী। উচ্চমাত্রার শর্করা, ক্যালরি ও ফ্যাট সম্পন্ন খেজুর জ্বর, মূত্রথলির ইনফেকশন, যৌনরোগ, গনোরিয়া, কণ্ঠনালির ব্যথা বা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, পক্ষাঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য উপকারী। ফুসফুসের সুরক্ষার পাশাপাশি মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধ করে।
অন্তঃসত্ত্বা নারীর সন্তান জন্মের সময় খেজুর খেলে জরায়ুর মাংসপেশির দ্রুত সংকোচন-প্রসারণ ঘটিয়ে, প্রসব হতে সাহায্য করে, প্রসব-পরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্য ও রক্তক্ষরণ কমিয়ে দেয়। খেজুরে আছে ডায়েটরই ফাইবার যা কলেস্টোরল থেকে মুক্তি দেয়। খেজুর লাংস ও ক্যাভিটি ক্যান্সার থেকে শরীরকে দূরে রাখে।
নারীদের শ্বেতপ্রদর ও শিশুর রিকেট নিরাময়ে খেজুরের কার্যকারিতা প্রশ্নাতীত। তাজা খেজুর নরম এবং মাংসল যা সহজেই হজম হয়। খেজুরে আছে ডায়েটরই ফাইবার যা কলেস্টোরল থেকে মুক্তি দেয়।
মুখের অর্ধাঙ্গ রোগ, পক্ষঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য উপকারী। খেজুরের বিচিও রোগ নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা রাখে। পাতলা পায়খানা বন্ধ করে। খেজুর পেটের গ্যাস, শ্লেষ্মা, কফ দূর করে, শুষ্ক কাশি এবং এজমায় উপকারী।
মোটকথা প্রিয় নবীজির হাদীসের উপর আমল হিসেবে খেজুর খেয়ে দুনিয়াবী ও পরকালীন বরকত লাভ সম্ভব হবে ইনশাল্লাহ।
Comments
Post a Comment