রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব ও ফজিলতঃ-


রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব ও ফজিলতঃ-
***********************************************
দিন-রাতের আবর্তন মহান আল্লাহ তায়ালার কুদরতের নিদর্শন। দিন-রাতের অব্যাহত গতিময়তা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য বিরাট অনুগ্রহ।
আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
 وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ خِلْفَةً لِمَنْ أَرَادَ أَنْ يَذَّكَّرَ أَوْ أَرَادَ شُكُورًا ﴿٦٢﴾
‘আর তিনি এমন সত্তা, যিনি রাত ও দিনকে একে অন্যের পশ্চাতে আগমনকারী বানিয়েছেন সেই ব্যক্তির জন্য, যে বুঝতে চায় অথবা শোকর আদায় করার ইচ্ছা করে।’
(সূরা ফুরকান, আয়াত : ৬২)।
আরবি মাসগুলোর মধ্যে রবিউল আউয়াল মাস বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ মাসটি মানব ইতিহাসের উজ্জ্বলতম অধ্যায়ের স্মারক। এ মাসেই সাইয়্যেদুল মুরসালিন, খাতামুন নাবিয়্যিন হজরত মুহাম্মদ সা: এ ধরাপৃষ্ঠে আগমন করেন, আবার এ মাসেই তিনি তাঁর ওপর অর্পিত রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে নিজ প্রভুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এই নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় গ্রহণ করেন এবং মহান আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্যে গমন করেন। এ মাসেই তিনি মাতৃভূমি মক্কা ছেড়ে মদিনায় হিজরত করেন।
সুতরাং এক দিকে এ মাসে রাসূল সা: এর শুভাগমন বিশ্ববাসীকে পুলকিত করে, অন্যদিকে এ মাসে তাঁর প্রস্থান মুসলিম বিশ্বকে শোকাভিভূত করে। তাই এ মাসটি একই সাথে শোক ও আনন্দের। সে কারণেই এ মাসের আলাদা একটি মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে অন্যান্য মাসের ওপর।

রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্বঃ-
রবিউল আউয়াল অর্থ প্রথম বসন্ত। বসন্তের আগমনে যেমন গাছের পুরনো পাতা ঝরে গিয়ে নতুন পাতার মাধ্যমে গাছ নতুন করে সজীবতা লাভ করে, অনুরূপ বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা:-এর আগমনে অতীতের পয়গম্বরদের শরিয়ত রহিত হয়ে মুহাম্মদ সা:-এর ইসলাম নামক শরিয়ত সঞ্জীবিত ও পূর্ণতা লাভ করে।
মাহে রবিউল আউয়ালের গুরুত্ব ও মহত্ত্ব অপরিসীম। সাইয়্যেদুল কাওনাইন হাবীবে খোদা মুহাম্মদুর রসুলুল্লাহ (সা.)-এর আগমন এই মাসে। যিনি বিশ্বনবী, শেষ নবী, যার শুভাগমনে ধন্য সমগ্র জগৎ, আলোকিত মক্কার মরুপ্রান্তর, যার কারণে চিরভাস্বর মদিনাতুল মুনাওয়ারাহ।
নবীজী সা:-এর আগমন ঘটেছিল এমন এক সময়ে, যখন পুরো আরব জাতি হত্যা, রাহাজানি, বেহায়াপনা, বেলেল্লাপনা সব কিছু মিলিয়ে আইয়ামে জাহেলিয়াত তথা অন্ধকার যুগে বসবাস করছিল। ঠিক সে সময়ে বিশ্ববাসীর মুক্তির দূত হিসেবে আগমন করেন দোজাহানের সরদার মুহাম্মদ সা:। মারামারি, হানাহানির এই পৃথিবীতে মহান আল্লাহ তায়ালা রাসূলে করিম সা:কে পাঠিয়েছেন বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ। ইরশাদ হয়েছে,
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ,,,
‘আমি আপনাকে সারা বিশ্বের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।’
(সূরা আম্বিয়া : ১০৭)।
 ওই আয়াত প্রমাণ করছে রসুলে আকরাম (সা.) গোটা সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত। আরও ইঙ্গিত বহন করছে আল্লাহ জগৎসমূহের রব এবং তার প্রিয়বন্ধু মুহাম্মদ (সা.) হলেন এ জগৎসমূহের রহমত। আল্লাহর রুবুবিয়্যাত তথা মালিকানা যে পর্যন্ত বিস্তৃত, বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়ত সে পর্যন্ত ব্যাপৃত।
মহানবীর আগমন যে বারাকাতপূর্ণ ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত রবিউল আউয়ালে সংঘটিত সঙ্গত কারণেই সে মাসটি উম্মতে মোহাম্মদী তথা জগত্বাসীর কাছে সম্মানিত, তাত্পর্যমণ্ডিত ও মহিমান্বিত। এমনকি বছরের মাস সমূহের মধ্যে রবিউল আউয়াল মাসের শ্রেষ্ঠত্ব, গুরুত্ব ও মহত্ত্ব সবচেয়ে বেশি ও অতুলনীয়।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,
﴿ شَهۡرُ رَمَضَانَ الَّذِىۡٓ اُنۡزِلَ فِيۡهِ الۡقُرۡاٰنُ ,,,
‘পবিত্র রমজান ওই সম্মানিত মাস, যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে।’ সূরা বাক্বারাহ, আয়াত ১৮৫।
কোরআন নাজিলের মাস নিঃসন্দেহে তাত্পর্যপূর্ণ, সম্মানিত ও গুরুত্বপূর্ণ। আরও ইরশাদ হয়েছে—
﴿ لَيۡلَةُ الۡقَدۡرِ ۙ خَيۡرٌ مِّنۡ اَلۡفِ شَهۡرٍؕ‏﴾,,
‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।’ সূরা কদর, আয়াত ৩।
রসুল (সা.)-এর ঐতিহাসিক ও গোটা বিশ্ববাসীকে অবাক করে দেওয়া এবং আধুনিক যুগের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানীদের হার মানিয়ে দেওয়া এমনকি চাঁদের দেশ ও মঙ্গল গ্রহের রকেট যাত্রীদের চিরপরাস্তকারী ও নতিস্বীকারে বাধ্যকারী মিরাজের ঘটনা, আরশে আজিমে আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথনের ঘটনা যা কোরআনে কারিমে আল্লাহ এভাবে উল্লেখ করেছেন অন্য আয়াতে-
﴿سُبۡحٰنَ الَّذِىۡۤ اَسۡرٰى بِعَبۡدِهٖ لَيۡلاً مِّنَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ اِلَى الۡمَسۡجِدِ الۡاَقۡصَا,,,
‘পবিত্রতা আল্লাহর যিনি তার বান্দা মুহাম্মদ (সা.)-কে রাতের কিয়দাংশ মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসায় নিয়ে গেলেন।’
অতঃপর আল্লাহ তার বান্দার (মুহাম্মদ সা.) কাছে প্রত্যাদেশ করলেন। এবারে যে বিষয়টি লক্ষণীয় তা হলো, কোরআনে কারিমে উল্লিখিত এসব আশ্চর্যান্বিত, তাত্পর্য-মণ্ডিত, সম্মানিত মাস, রজনী, দিবস, ক্ষণ, ঘটনাবলি এর অর্জন ও প্রাপ্তিতে উম্মতে মুহাম্মদী তথা জগত্বাসী সম্মানিত ও সৌভাগ্যবান হয়েছে একমাত্র বিশ্বনবীর (সা.) কারণে ও তার মাধ্যমে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
يَا أَهْلَ الْكِتَابِ قَدْ جَاءَكُمْ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمْ كَثِيرًا مِمَّا كُنْتُمْ تُخْفُونَ مِنَ الْكِتَابِ وَيَعْفُو عَنْ كَثِيرٍ قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِينٌ,,,
''হে কেতাবীগণ আমার রাসূল তোমাদের নিকট এসেছে। কিতাবের যা তোমরা গোপন করতে তিনি তাঁর অনেক অংশ তোমাদের নিকট প্রকাশ করে। এবং অনেক যা এখন অপ্রয়োজনীয় তা উপেক্ষা করে। আল্লাহর নিকট থেকে তোমাদের নিকট এসেছে এক নতুন আলো এবং এক প্রাঞ্জল কিতাব।'' (৫:১৫)
সে মহাগ্রন্থ আল কোরআন এবং আল–কোরআনের বাস্তব রূপ হলেন আল্লাহর হাবিব মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)।
তিনি এলেন শুক্লপক্ষে, রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে।
তাই তো এ মাসটির ফজিলত, গুরুত্ব ও মহত্ত্ব অধিক ও অপরিসীম হওয়াই ইমানের দাবি। এতদ্ভিন্ন এই রবিউল আউয়ালকে কেন্দ্র করে আরও বহু ঐতিহাসিক, গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় ঘটনা রয়েছে, যা মাহে রবিউল আউয়ালের মর্যাদা ও গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয় এবং আকর্ষণীয় করে তোলে।
যেমন উল্লেখ করা যেতে পারে-
* মহানবী (সা.) হিজরতের উদ্দেশে রওনা করেছিলেন ১ রবিউল আউয়াল। তিনি মদিনায় পৌঁছেন ১২ রবিউল আউয়াল।
*মা খাদিজাতুল কুবরা (রা.)-এর সঙ্গে রসুলে আকরাম (সা.)-এর পরিণয় হয়েছিল ১০ রবিউল আউয়াল।
* প্রিয়নবী মোস্তফা (সা.) মসজিদে কুবা নির্মাণ করেন ১৬ রবিউল আউয়াল।
মাহে রবিউল আউয়ালের আগমন ঘটে নবী প্রেমের প্রতীক ও নিদর্শন হিসেবে। যার হৃদয়ে নবীপ্রেম ও নবীর ভালোবাসা থাকবে, রবিউল আউয়াল তার অন্তকরণে আবেগ, উচ্ছ্বাস আর স্পন্দন সৃষ্টি করবে। উৎসাহিত আর প্রত্যয়ী করবে নবী (সা.)-এর আদর্শ ও সুন্নাতের প্রতি।

রবিউল আওয়াজল মাসের ফজীলতঃ-
এ মাসের ফজিলত অপরিসীম। কোনো কোনো হাদিসে রবিউল আউয়ালের প্রথম দিন রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
এমনি এক মোহনীয় সময়ে জগদ্বাসীর জন্য প্রশান্তির বারতা নিয়ে পৃথিবীতে শুভাগমন করলেন রহমাতুল লিল আলামিন তথা সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য রহমত ও করুণার আধার মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। সঙ্গে নিয়ে এলেন সভ্যতার বসন্তকাল। সেদিনটি ছিল সোমবার। আজও মদিনাবাসী সপ্তাহে সোমবারে রোজা পালন করেন, মদিনা শরিফে মসজিদে নববিতে করা হয় ইফতারের বিশেষ আয়োজন। নবী করিম (সা.) সোমবার রোজা পালন করতেন। সাহাবিগণ জানতে চাইলেন, হুজুর, আপনি কেন প্রতি সোমবার রোজা পালন করেন? নবীজি (সা.) উত্তরে বললেন,
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ الأَنْصَارِيِّ، رضى الله عنه أَنَّرَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنْ صَوْمِ الاِثْنَيْنِ فَقَالَ ‏ "‏ فِيهِ وُلِدْتُ وَفِيهِ أُنْزِلَ عَلَىَّ ‏"‏ ‏.,,
আবূ ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে সোমবারের সওম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ঐদিন আমি জন্মলাভ করেছি এবং ঐদিন আমার উপর (কুরআন) নাযিল হয়েছে। (ই.ফা. ২৬১৭, ই. সে. ২৬১৬) সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৬৪০।
সোমবারেই আমার জন্ম হয়েছিল; তাই এই দিনটিতে আমি রোজা পালন করে আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া জ্ঞাপন করি।
হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলে করিম সা: ইরশাদ করেন,
‘যে ব্যক্তি এ মাসের প্রথম তারিখে রোজা রাখবে। আল্লাহ তায়ালা তাকে পূর্ণ বছর রোজা রাখার সওয়াব দান করবেন।’
তা ছাড়া, এ মাসে রাসূলের ওপর দরুদ পড়ার গুরুত্বও অনেক। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূলে করিম সা: ইরশাদ করেন,
‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে, আমি তার ওপর ১০০ বার দরুদ পাঠ করব।’
এ ছাড়াও এ মাসে প্রতিদিন গোসল করা, অধিক পরিমাণে নফল নামাজ পড়া, কুরআন তিলাওয়াত করা ও অন্যান্য নফল ইবাদত করার ফজিলতও বর্ণিত হয়েছে। তবে হাদিসগুলোর সনদের মান দুর্বল।
মাহে রবিউল আউয়াল জগৎবাসীর কাছে, বিশেষত মুসলিম উম্মাহর কাছে নববী আদর্শের তথা আত্মশুদ্ধি ও সমাজ সংস্কারের পয়গাম নিয়ে আসে। এ পয়গাম বিশেষ কোনো গোষ্ঠী বা ভূখণ্ডের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং সার্বজনীন।
রাসূলুল্লাহ সা: ৪০ বছর বয়সে নবুওয়াত লাভ করেন এবং ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন। মাত্র ২৩ বছরের কর্মসাধনায় তিনি সমাজ ও দেশের এমন পরিবর্তন সাধন করেন, যা মানব ইতিহাসের গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। সমাজে মনুষ্যত্ব নির্মাণের উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তিনি।
দীর্ঘ ২৩ বছর পর আবার এই রবিউল আউয়াল মাসেই প্রভুর সান্নিধ্যে পাড়ি জমান তিনি। রবিউল আউয়ালের কোনো একদিন রাসূল সা: এর শরীরের উত্তাপ বেড়ে যায়। সাথে সাথে কষ্টও বৃদ্ধি পায়। একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। সামান্য স্বস্তিবোধ হলে তিনি মাথায় পট্টি বেঁধে মিম্বারে আরোহণ করেন। সমবেত সাহাবায়ে কেরামের উদ্দেশে তিনি বলেন,
‘ইহুদি-নাসারাদের ওপর আল্লাহ তায়ালার লানত। তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদে পরিণত করেছে।’ (বুখারি শরিফ)। তিনি আরো বলেন,
‘তোমরা আমার কবরকে পূজা করার উদ্দেশ্যে মূর্তিতে পরিণত করো না।’ (মুয়াত্তা ইমাম মালেক)। এরপর রাসূল সা: বলেন,
‘আমি যদি কাউকে আঘাত করে থাকি তাহলে সে আমার পিঠে চাবুক মেরে প্রতিশোধ গ্রহণ করুক।’ এই বলে তিনি নিজের পিঠ উন্মোচন করে দিলেন। তিনি আরো বলেন,
‘আমাকে এক টুকরো কাগজ এনে দাও, আমি তোমাদেরকে কিছু উপদেশ লিখে দিই। তাহলে তোমরা গোমরাহ হবে না।’ পরবর্তীকালে হজরত উমর রা:-এর অনুরোধে হুজুর সা: তা লিখলেন না। (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)।
এ মাসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো রাসূলুল্লাহ সা:কে ভালোবাসা। রাসূলের ভালোবাসা ঈমানের অঙ্গ। হাদিস শরিফে রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন,
‘তোমাদের কেউ ততক্ষণ পযন্ত পূর্ণ মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ না সে আমাকে তার বাবা-মা, ছেলে-সন্তান ও সব মানুষ থেকে অধিক ভালো না বাসবে।’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ১১/২০০)।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো, আমাদের মুসলিম সমাজে কিছু লোক রাসূলের ভালোবাসার নামে দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে, লাল কালি দিয়ে ‘বিশ্ব আশেকে রাসূল’ লিখে দেয়াল লালে লাল করে ফেললেও রাসূলুল্লাহ সা: এর জীবনাদর্শ ও সুন্নতকে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করে না।  অথচ নামাজের কোন খবর নেই, নেই কোন রোজার খবর। বস্তুত এসব কাজ অযৌক্তিক আনুষ্ঠানিকতা মাত্র, যার কোনো শরয়ী ভিত্তি নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে, রাসূলের ভালোবাসা শুধু রবিউল আউয়াল মাসে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়; বরং জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিমুহূর্তে, প্রতিক্ষণে সিরাত চর্চা করা, তাঁর সুন্নতের অনুসরণ করা ও তাঁর জীবনাদর্শকে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করা উচিত। তবেই প্রমাণিত হবে আমরা আশেকে রাসূল এবং রক্ষিত হবে রবিউল আউয়াল মাসের মর্যাদা।
অতএব, আমাদের উচিত হবে রসুলে আকরাম (সা.)-এর আগমনের এই মাসকে কেন্দ্র করে তার ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তার মহান আদর্শ ও সুন্নতকে আঁকড়িয়ে ধরে ইহকালীন ও পরকালীন অগ্রগতি ও মুক্তিলাভে সাফল্যমণ্ডিত হওয়া।  মাহে রবিউল আউয়ালের বারাকাত, রসুলে আকরাম (সা.)-এর মহব্বত ও  পরকালীন নাজাত আল্লাহ আমাদের সবাইকে নসিব করুন। আমিন।


Comments