শবে বরাতের ইবাদত করা প্রসঙ্গে- করণীয় ও বর্জনীয়ঃ-
************************************
শবে বরাত সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অবস্থান।
সম্মানীত দ্বীনি ভাইয়েরা, আমাদের সামনে শাবান মাসের ১৫ তারিখে শবে বরাত বলে একটা রাত আসছে। সে রাতকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে অনেক ধরনের কথা শুনা যায়।
প্রথমে বলে নেই শবে বরাত শব্দটা কুরআন-হাদীসের কোথাও নাই। কুরআন হাদীসের ভাষা হলো “লাইলাতুন নিছ্ফ মিন শাবান”। শবে বরাত সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে স্পষ্ট কোন আলোচনা নাই। হাদীসে এই রাত সম্পর্কে পরিস্কার আলোচনা আসছে। তবে সেখানে ও শবে বরাত শব্দ নাই। সেখানে আছে “লাইলাতুন নিছ্ফ মিন শাবান”।
আর “লাইলাতুন নিছ্ফ মিন শাবান”কে এই জন্য শবে বরাত বলা হয় যে, শব অর্থ হলো রাত আর বরাত অর্থ হলো নাজাত তথা মুক্তি। হাদীস দ্বারা যখন প্রমানীত এই রাতে আল্লাহ তায়ালা অনেক লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন তাই এই রাতকে মুক্তির রাত তথা শবে বরাত বলা হয়।
এবার মূল কথায় আসা যাক। আমাদরে সমাজে এক শ্রেনীর লোক এতদিন পর্যন্ত শবে বরাতকে কেন্দ্র করে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত ছিল। তারা এ রাতটি উপলক্ষে অনেক ধরনের বেদয়াত ও বর্জনীয় আমল সমাজে চালু করেছেন। হক্কানী উলামায়ে কেরাম সব সময়ই তাদের এসব বেদয়াতের প্রকাশ্যে অপ্রকাশে প্রতিবাদ করে আসছেন।
ইদানিং আমরা লক্ষ করতেছি, আবার এক শ্রেণীর মানুষের মধ্যে ছাড়াছাড়ির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তাদের দাবী হল ইসলামে শবে বরাতের কোন রাত নেই। এ ব্যাপারে যত হাদীস আছে সব জাল বা যয়ীফ। তাই এই রাতে আমল করা এবং শবে বরাতকে বিশেষ কোন ফযীলতপূর্ণ রাত মনে করা নাজায়েয তথা বেদয়াত।
বাস্তব কথা হল, আগেকার সেই বাড়াবাড়ির পথটিও যেমন সঠিক ছিল না,এখনকার এই ছাড়াছাড়ির মতটিও শুদ্ধ নয়।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অভিমতঃ-
শবে বরাত সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মত হলো, এ রাতের ফযীলত সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। সম্মিলিত কোন রূপ না দিয়ে এবং এই রাত উদযাপনের বিশেষ কোন পন্থা উদ্ভাবন না করে বেশি ইবাদত করাও নির্ভরযোগ্য রেওয়াত দ্বারা প্রমাণিত। এই রাতকে অন্য সব সাধারণ রাতের মতো মনে করা এবং এই রাতের ফযীলতের ব্যাপারে যত হাদীস এসেছে, তার সবগুলোকে মওযু বা যয়ীফ মনে করা ভুল।
পক্ষান্তরে এ রাতকে মর্যাদা দিতে গিয়ে শবে কদরের মত বা তার চেয়েও বেশি ফযীলতপূর্ণ মনে করাও ভুল ধারণা।
সম্মানীত দ্বীনি ভাইয়েরা আসুন,
আমরা আর দেরী না করে শবে বরাত উপলক্ষে যে সব হাদীস বর্ণিত হয়েছে সে সব হাদীস নিয়ে আলোচনা করি। শবে বরাতের ফযীলত সম্পর্কে কয়েকটি ছহীহ হাদীস পাওয়া যায়।
ছহীহ ইবনে হিব্বানের হাদীসে আছে রাসূল সাঃ বলেন,
ﻋﻦ ﻣﻌﺎﺫ ﺑﻦ ﺟﺒﻞ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻳﻄﻠﻊ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﻟﻰ ﺧﻠﻘﻪ ﻓﻲ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻴﻐﻔﺮ ﻟﺠﻤﻴﻊ ﺧﻠﻘﻪ ﺇﻻ ﻟﻤﺸﺮﻙ ﺃﻭ ﻣﺸﺎﺣﻦ..
অর্থ, হযরত মুআয ইবনে জাবাল রাঃ থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাঃ ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে (শাবানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে তথা শবে বরাতে) সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।
(সহীহ ইবনে হিব্বানঃ ১২/৪৮১ হাদীস নং-৫৬৬৫)
হাদীসটি আরো যে সব কিতাবে আছে। ছহীহ আত তরগীব ওয়াত তারহীব লিল আলবনীঃ ১/২৪৮ হাদীস নং ১০২৬।
মুসনাদুল বাজ্জারঃ হাদীস নং ২৭৫৪।
মুসনাদুশ শামীনঃ হাদীস নং ২০৩।
মুসন্নাফে ইবনে আবী শাইবাঃ হাদীস নং ৩০৪৭৯।
মুসনাদে ইসহাক বিন রাহওয়াইঃ হাদীস নং ১৭০২।
আল মুজামুল আওসাতঃ হাদীস নং ৬৭৭৬।
আল মুজামুল কাবীরঃ হাদীস নং ২১৫।
শুয়াবুল ঈমানঃ হাদীস নং৬২০৪।
হাদীসটি কি ছহীহ না যয়ীফ?
সম্মানীত দ্বীনি ভাইয়েরা এবার আসুন এখন আমরা আলোচনা করবো হাদীসটি কি ছহীহ না যয়ীফ?
জমহূরে মুহাদ্দিসীনে কিরামরে মত হলো, হাদীসটির সনদ সহীহ। এজন্যই ইমাম ইবনে হিব্বান রহঃ হাদীসটিকে তার ছহীহ হাদীসের কিতাবে বর্ণনা করেছেন। কেউ কেউ হাদীসটিকে পারিভাষিক দৃষ্টিকোণ থেকে হাসান বলেছেন। কিন্তু হাসান হাদীসও আমল যোগ্য।
ইমাম মনযিরী, ইবনে রজব, নূরুদ্দীন হাইসামী, কাস্তাল্লানী, যুরকানী এবং অন্যান্য হাদীস বিশারদগণও এই হাদীসটিকে আমলযোগ্য বলেছেন। মাজমাউয যাওয়ায়েদঃ ৮/৬৫,
ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﻄﺒﺮﺍﻧﻲ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﺒﻴﺮ ﻭﺍﻷﻭﺳﻂ ﻭﺭﺟﺎﻟﻬﻤﺎ ﺛﻘﺎﺕ ।
বর্তমান সময়ের প্রসিদ্ধ শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহঃ সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহা-এ এই হাদীসের সমর্থনে আরো কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করার পর বলেন,
ﻭﺟﻤﻠﺔ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺃﻥ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺑﻤﺠﻤﻮﻉ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻄﺮﻕ ﺻﺤﻴﺢ ﺑﻼﺭﻳﺐ . ﻭﺍﻟﺼﺤﺔ ﺗﺜﺒﺖ ﺑﺄﻗﻞ ﻣﻨﻬﺎ ﻋﺪﺩﺍ، ﻣﺎﺩﺍﻣﺖ ﺳﺎﻟﻤﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻀﻌﻒ ﺍﻟﺸﺪﻳﺪ، ﻛﻤﺎﻫﻮ ﺍﻟﺸﺄﻥ ﻓﻰ ﻫﺬﺍﺍﻟﺤﺪﻳﺚ
অর্থ, সারকথা হল এই যে, নিশ্চয় এই হাদিসটি এই সকল সূত্র পরম্পরা দ্বারা সহীহ, এতে কোন সন্দেহ নেই। আর সহীহ হওয়া এর থেকে কম সংখ্যক বর্ণনার দ্বারাও প্রমাণিত হয়ে যায়, যতক্ষণ না মারাত্মক কোন দুর্বলতা থেকে বেঁচে যায়, যেমন এই হাদিসটি হয়েছে।
(সিলসিলাতুল আহাদসিস সাহীহাঃ ৩/২১৮, ১১১৪ নং হাদীসের আলোচনায়)
তারপর আলবানী রহঃ ওই সব লোকের বক্তব্য খন্ডন করেন যারা কোন ধরণের তাহকীক ছাড়াই বলে দেন যে, শবে বরাতের ব্যাপারে কোন সহীহ হাদীস নেই।
আহলে হাদীসের ভাইয়েরা এখন কি বলবেন? নাসীর উদ্দীন আলবানী হাদীসটাকে ছহীহ বলার পরও কি এখনো বলবেন হাদীসটি ছহীহ না? শবে বরাতের কোন ফযীলত নাই?
সম্মানীত দ্বীনি ভাইয়েরা,
যদি শবে বরাতের ফযীলতের ব্যাপারে এই হাদীস ছাড়া অন্য কোন হাদীস না থাকত, তাহলেও এই হাদীসটিই এ রাতের ফযীলত সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এবং এ রাতে মাগফেরাতের উপযোগী নেক আমলের গুরুত্ব প্রমাণিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট হত। অথচ হাদীসের কিতাবসমূহে নির্ভরযোগ্য সনদে এ বিষয়ক আরো একাধিক হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
এই হাদীস বুঝা যায় যে, শবে বরাতে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে রহমত ও মাগফেরাতের দ্বারা ব্যপকভাবে উন্মুক্ত হয়। কিন্তু শিরকি কাজ-কর্মে লিপ্ত ব্যক্তি এবং অন্যের ব্যাপারে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণকারী মানুষ এই ব্যপক রহমত ও সাধারণ ক্ষমা থেকেও বঞ্চিত থাকে।
আরো যে সব কিতাবে হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। ছহীহ ওয়া যয়ীফ ইবনে মাযায় উল্লেখ আছে,
ﺗﺤﻘﻴﻖ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﺣﺴﻦ
অর্থাৎ, নাসীর উদ্দীন আলবানির গবেষনা অনুযায়ী হাদীসটির মান হাসান। (ছহীহ ওয়া যয়ীফ ইবনে মাযায়ঃ ৩/৩৯০ হাদীস নং ১৩৯০)।
ছহীহ জামেউস সগীরঃ ১/১৭০।
ছহীহুল জামে লিল আলবানীঃ ২/১৭০।
শবে বরার সম্পর্কে আহলে হাদীসের শায়েখ মোবারকপূরির অভিমতঃ-
আহলে হাদীসের উল্লেখযোগ্য ইমাম শায়েখ মুহাম্মদ আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুর রহীম মুবারাকপূরী রহঃ শবে বরাত সম্পর্কে অনেকগুলো হাদীস উল্লেখ করার পর বলেন,
ﻓﻬﺬﻩ ﺍﻷﺣﺎﺩﻳﺚ ﺑﻤﺠﻤﻮﻋﻬﺎ ﺣﺠﺔ ﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﺯﻋﻢ ﺃﻧﻪ ﻟﻢ ﻳﺜﺒﺖ ﻓﻲ ﻓﻀﻴﻠﺔ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﺷﺊ ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺃﻋﻠﻢ
অর্থ, এই সকল হাদীস সমষ্টিগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে দলীল যারা বলে, লাইলাতুন নিছফে মিন শাবানের তথা শবে বরাতের কোন ফযীলত নাই। অর্থাৎ, এই রাতের ফযীলত আছে। যারা বলে এই রাতের ফযীলত নাই তারা ভুলের উপর আছে।
(তহফাতুল আহওয়াযী শরহে তিরমিযীঃ ১/৪৬৯)।
সম্মানীত দ্বীনি ভাইয়েরা,
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের উলামায়ে কিরাম এই সব হাদীসকে সামনে রেখে বলে থাকেন, “লাইলাতুন নিছ্ফ মিন শাবান” তথা শবে বরাতে ইবাদত করা বিদয়াত নয়। বরং তা অনেক নেক কাজ। তবে সেখানে কোন ধরনের বেদয়াতের সুযোগ দেয়া হবে না। সে সব আলোচনা সামনে আসতেছে।
এই রাতে করনীয় আমলঃ-
আমরা উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম যে, শবে বরাত অনেক ফযীলতের রাত। এই রাতে সবাইকে আল্লাহ তায়ালার ইবাদতে মাশগুল থাকতে হবে।
আসুন, আমরা এখন আলোচনা করবো, এই রাতে আমরা কোন ধরনের আমল করতে পারি। এই রাতে আমরা বেশী বেশী নফল নামায পড়বো।
হযরত আয়েশা রাঃ থেকে একটি হাদীস বর্ণিত আছে, রাসূল সাঃ এর এই রাতে বেশী বেশী নফল নামায পড়তেন। নামাযের অবস্থা অন্য নামায থেকে অনেক লম্বা হতো।
আসুন, আমরা প্রথমে সে হাদীসটি উল্লেখ করি। ইমাম বাইহাকী রহঃ তার কিতাবে হাদীসটি উল্লেখ করেন।
হাদীসটি হলো,
ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﻗﺎﻟﺖ ﻗﺎﻡ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻴﻞ ﻳﺼﻠﻲ ﻓﺄﻃﺎﻝ ﺍﻟﺴﺠﻮﺩ ﺣﺘﻰ ﻇﻨﻨﺖ ﺃﻧﻪ ﻗﺪ ﻗﺒﺾ ﻓﻠﻤﺎ ﺭﺃﻳﺖ ﺫﻟﻚ ﻗﻤﺖ ﺣﺘﻰ ﺣﺮﻛﺖ ﺇﺑﻬﺎﻣﻪ ﻓﺘﺤﺮﻙ ﻓﺮﺟﻌﺖ ﻓﻠﻤﺎ ﺭﻓﻊ ﺇﻟﻲ ﺭﺃﺳﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺴﺠﻮﺩ ﻭ ﻓﺮﻍ ﻣﻦ ﺻﻼﺗﻪ ﻗﺎﻝ : ﻳﺎ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺃﻭ ﻳﺎ ﺣﻤﻴﺮﺍﺀ ﺃﻇﻨﻨﺖ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﻗﺪ ﺧﺎﺱ ﺑﻚ ﻗﻠﺖ : ﻻ ﻭ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻭ ﻟﻜﻨﻨﻲ ﻇﻨﻨﺖ ﺃﻧﻚ ﻗﺒﻀﺖ ﻟﻄﻮﻝ ﺳﺠﻮﺩﻙ ﻓﻘﺎﻝ : ﺃﺗﺪﺭﻳﻦ ﺃﻱ ﻟﻴﻠﺔ ﻫﺬﻩ ؟ ﻗﻠﺖ : ﺍﻟﻠﻪ ﻭ ﺭﺳﻮﻟﻪ ﺃﻋﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ﻫﺬﻩ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰ ﻭ ﺟﻞ ﻳﻄﻠﻊ ﻋﻠﻰ ﻋﺒﺎﺩﻩ ﻓﻲ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻴﻐﻔﺮ ﻟﻠﻤﺴﺘﻐﻔﺮﻳﻦ ﻭ ﻳﺮﺣﻢ ﺍﻟﻤﺴﺘﺮﺣﻤﻴﻦ ﻭ ﻳﺆﺧﺮ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺤﻘﺪ ﻛﻤﺎ ﻫﻢ
অর্থ, হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাঃ রাতে নামাযে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সেজদা করেন যে, আমার ধারণা হল তিনি হয়ত মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন।
ওহে আয়েশা অথবা বলেছেন, ওহে হুমাইরা, তোমার কি এই আশংকা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম,না,ইয়া রাসূলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার এই আশংকা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। তখন নবী সাঃ জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জান এটা কোন রাত?
আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন। রাসূলুল্লাহ সাঃ তখন ইরশাদ করলেন, ‘এটা হল অর্ধ শাবানের রাত (শাবানের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত তথা শবে বরাত)। আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে তার বান্দার প্রতি মনযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।
ইমাম বাইহাকী (রহঃ) এই হাদীসটি বর্ণনা করার পর এর সনদের ব্যাপারে বলেন,
ﻗﻠﺖ : ﻫﺬﺍ ﻣﺮﺳﻞ ﺟﻴﺪ ﻭ ﻳﺤﺘﻤﻞ ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﺍﻟﻌﻼ ﺑﻦ ﺍﻟﺤﺎﺭﺙ ﺃﺧﺬﻩ ﻣﻦ ﻣﻜﺤﻮﻝ ﻭ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻋﻠﻢ....
অর্থ, আমি বলি এই হাদীসটি উত্তম মুরসাল।
(শুআবুল ঈমান লিল বাইহাকী ৩/৩৮২ হাদীস নং ৩৮৩৫,
আদ দুয়া লিত তাবরানীঃ ১/১৯৪ হাদীস নং ৬০৬, )
আমরা সকলেই জানি নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীদের মুরসাল হাদীস দ্বারা দলীল দেয়া জায়েয আছে। তাই হাদীসটি মুরসাল হলেও আমলযোগ্য।
সম্মনীত দ্বীনি ভাইয়েরা,এই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়, এ রাতে দীর্ঘ নফল নামায পড়া, যাতে সেজদাও দীর্ঘ হবে।
কিছু ভুল ধারণাঃ-
শবে বরাতে কি নির্দিষ্ট কোন নামায আছে?
আমাদের সমাজে অনেক অনির্ভরযোগ্য বইপুস্তকে এই রাতের নামাযের যে নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন লেখা আছে অর্থাৎ এত রাকআত হতে হবে, প্রতি রাকআতে এই সূরা এতবার পড়তে হবে এগুলো ঠিক নয়। হাদীস শরীফে এর কোন প্রমান নাই। এমন কি কোন ফাতওয়ার কিতাবেও এই বিষয়ে উল্লেখ নাই। এগুলো মানুষের মনগড়া বানানো ইবাদত ছাড়া আর কিছু নয়।
সঠিক পদ্ধতি হল, নফল নামাযের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী দুই রাকআত করে যত রাকআত সম্ভব হয় পড়তে থাকা। কুরআন কারীম তেলওয়াত করা। দরূদ শরীফ পড়া। ইস্তেগফার করা। দুআ করা এবং কিছুটা ঘুমের প্রয়োজন হলে ঘুমানো।
আবার অনেককে দেখা যায় রাত জেগে ইবাদত করে আর তাদের ফযরের নামায কাযা হয়ে যায়। আবার অনেক এমন আছেন, যারা ফযরের নামাযই পড়েন না।
তাই লক্ষ রাখতে হবে এমন যেন না হয় যে, সারা রাতের দীর্ঘ ইবাদতের ক্লান্তিতে ফজরের নামায জামাআতের সাথে পড়া সম্ভব হল না।
আমরা এই রাতে বেশী বেশী করে আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া চাইবো। নফল নামাযের সাথে সাথে আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশী বেশী দোয়া করবো।
ইমাম শাফী রহঃ তার রচিতগ্রন্থ কিতাবুল উম-এ বলেন,
ﺇﻥ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ﻳﺴﺘﺠﺎﺏ ﻓﻲ ﺧﻤﺲ ﻟﻴﺎﻝ ﻓﻲ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﻭ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻷﺿﺤﻰ ﻭ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻔﻄﺮ ﻭ ﺃﻭﻝ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﻦ ﺭﺟﺐ ﻭ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ
অর্থ, নিশ্চয় পাঁচ রাতে দোয়া কবুল হয়। এক, জুমার রাত। দুই, কুরবানির ঈদের রাত। তিন, ঈদুল ফিতরের রাত। চার, রযব মাসের প্রথম রাত। এবং পাঁচ নম্বার রাত হলো লাইলাতুন নিছ্ফ মিন শাবান তথা শবে বরাতে।
(ইমাম শাফী রহঃ এর রচিতগ্রন্থ কিতাবুল উমঃ ১/২৬৪, আল-মাজমূ লিল ইমাম নববীঃ ৫/৪৩ , তলখীসুল হাবীর লিল ইবনে হযর আসকলানীঃ ৮/৬)
একই ধরনের কথা ইমাম বাইহাকী রহঃ তার রচিতগ্রন্থ শুআবুল ঈমান-এর ৩৭১১ হাদীস নং হাদীসের আলোচনায় উল্লেখ করেছেন ৩/৩৪১।
হযরত ইবনে ওমর রাঃ বলেন,
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻗﺎﻝ ﺧﻤﺲ ﻟﻴﺎﻝ ﻻ ﻳﺮﺩ ﻓﻴﻬﻦ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﻭ ﺃﻭﻝ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﻦ ﺭﺟﺐ ﻭ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻭ ﻟﻴﻠﺘﺎ ﺍﻟﻌﻴﺪ..
অর্থাৎ, পাঁচ রাত এমন আছে যে সব রাতে দোয়া ফেরত দেয়া হয় না তথা দোয়া কবুল করা হয়। এক, জুমার রাত। দুই, রযব মাসের প্রথম রাত।তিন, লাইলাতুন নিছ্ফ মিন শাবান তথা শবে বরাতে। চার এবং পাঁচ নম্বার রাত হলো দুই ঈদের রাত।
(শুআবুল ঈমান লিল বাইহাকী ৩/৩৪২ , হাদীস নং ৩৭১৩)।
এই সব বর্ণনা সামনে রেখে উলামাগণ বলে, এই রাতে বেশী বেশী আল্লাহর কাছে দোয়া করা । কারন, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা দোয়া কবুল করেন। কারো দোয়া ফেরত দেন না। তাই সকলে আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশী বেশী দোয়া করা, আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সবাইকে মাফ করে জান্নাতীদের খাতায় নাম লিখান।
উল্লিখিত বিস্তারিত আলোচনা থেকে এটাই প্রমানীত হয় যে, শবে বরাতের ফযীলত ছহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানীত। রাসূল সাঃ এই রাতে বেশী বেশী নফল নামায পড়েছেন। তাই আমরাও এই রাতে বেশী বেশী নফল নামায পড়তে পারি। এই রাতে দোয়া কবুল হয়। তাই আমরা এই রাতে বেশী বেশী আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের যে কোন প্রয়োজনের জন্য দোয়া করতে পারি। বেশী বেশী কুরআন তিলাওয়াত করতে পারি। আরো যত ধরনের নফল ইবাদত আছে আমরা সে সব ধরনের নফল ইবাদত এই রাতে করতে পারি।
এই রাতে কি কোন সম্মেলিত আমল আছে?
শেষ কথা হলো, আমাদের সমাজে দেখা যায় যে, কিছু এলাকায় শবে বরাতকে কেন্দ্র করে কিছু সংখ্যক লোক সম্মেলিত অমল করে থাকে। আমাদের এ বিষয়টি মনে রাখতে হবে যে, এ রাতের নফল আমলসমূহ, বিশুদ্ধ মতানুসারে একাকীভাবে করণীয়। এখানে কিছুতেই সম্মেলিতভাবে কিছু করার সুযোগ নাই। এশার নামায তো অবশ্যই মসজিদে জামাতের সহিত আদায় করতে হবে। এরপর যা কিছু নফল পড়ার তা নিজ নিজ ঘরে একাকী পড়বে। এসব নফল আমলের জন্য দলে দলে একে অপরকে ডেকে ডেকে মসজিদে নিয়ে এসে সমবেত হওয়ার কোন প্রমাণ হাদীস শরীফেও নেই আর সাহাবায়ে কেরামরে যুগেও এর রেওয়াজ ছিল না। (মারাকিল ফালাহ ২১৯)।
তবে হ্যাঁ কোন আহবান ও ঘোষণা ছাড়া এমনিই কিছু লোক যদি মসজিদে এসে যায়, আর তারা সবাই নিজ নিজ আমল সমূহ একা একা আদায় করে তাহলে কোন সমস্যা নাই।
কোন কোন জায়গায় এই রেওয়াজ আছে যে, এ রাতে মাগরিব বা ইশার পর থেকেই ওয়াজ-নসীহত আরম্ভ হয়। আবার কোথাও ওয়াজের পর মিলাদ-মাহফিলের অনুষ্ঠান হয়। কোথাও তো সারা রাত খতমে-শবীনা হতে থাকে। উপরন্তু এসব কিছুই করা হয় মাইকে এবং বাইরের মাইকও ছেড়ে দেওয়া হয়। মনে রাখতে হবে, এসব কিছুই ভুল। তবে হ্যাঁ কেউ রাতে আমল করতে আসলে ইমাম সাহেবকে কিছু প্রশ্ন করলে ইমাম সাহেব সে বিষয়ে কিছু বললে তখন যদি তা শুনার জন্য কয়েক জন লোক একত্রিত হয়ে যায় তাতে কোন সমস্যা নাই।
শবে বরাতে বর্জনীয় কাজঃ-
আমাদের শবে বরাতে সে সব কাজ বর্জন করতে হবে তা হলো,
মসজিদে মসজিদে অতিরিক্ত আলোক সজ্জার মাধ্যমে অপব্যয় করা। হিন্দুদের মত আতশবাজি ফুটানো। দলবদ্ধ ইবাদতকে আবশ্যক মনে করে মসজিদে বা কোথাও জামাত বা একত্র হওয়া এবং এবাদত করা। এ'লান করে দলবদ্ধ হয়ে কবর যেয়ারত করা।
সম্মানীত ভাইয়েরা,
আসুন আমরা এই রাতে বাড়া বাড়ি এবং ছাড়া ছাড়ি না করে সঠিক মতটা গ্রহন করে আল্লাহ তায়ার ইবাদতে মশগুল হই।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিকভাবে যথাযথ মর্যাদায় শবে বরাতে সঠিক নিয়মে আমল করার তৌফিক দান করুন।
আমীন।
আজ ক্ষমার রজনী পবিত্র শবে বারাত। এই রাতে আমরা সবাই সবার জন্য দোয়া করব। শবে বরাতের সমর্থনে আরো কয়েকটি হাদীস নিম্নে পেশ করছি।
(১)
ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ﻫَﻞ ﺗﺪﺭﻳﻦ ﻣَﺎ ﻫَﺬِﻩ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞ؟ ﻳَﻌْﻨِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻣَﺎ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻓِﻴﻬَﺎ ﺃَﻥْ ﻳُﻜْﺘَﺐَ ﻛﻞُّ ﻣَﻮْﻟُﻮﺩٍ ﻣِﻦْ ﺑَﻨِﻲ ﺁﺩَﻡَ ﻓِﻲ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺴَّﻨَﺔِ ﻭَﻓِﻴﻬَﺎ ﺃَﻥْ ﻳُﻜْﺘَﺐَ ﻛُﻞُّ ﻫَﺎﻟِﻚٍ ﻣِﻦْ ﺑَﻨِﻲ ﺁﺩَﻡَ ﻓِﻲ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺴَّﻨَﺔِ ﻭَﻓِﻴﻬَﺎ ﺗُﺮْﻓَﻊُ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟُﻬُﻢْ ﻭَﻓِﻴﻬَﺎ ﺗَﻨْﺰِﻝُ ﺃَﺭْﺯَﺍﻗُﻬُﻢْ
ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﺣَﺪٍ ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﺮَﺣْﻤَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﺃﺣﺪ ﻳﺪْﺧﻞ ﺍﻟْﺠﻨَّﺔ ﺇِﻟَّﺎ ﺑﺮﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ . ﺛَﻠَﺎﺛًﺎ . ﻗُﻠْﺖُ : ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻧْﺖَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ؟ ﻓَﻮَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﻋَﻠَﻰ ﻫَﺎﻣَﺘِﻪِ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻧَﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻥْ ﻳَﺘَﻐَﻤَّﺪَﻧِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺑِﺮَﺣْﻤَﺘِﻪِ. ﻳَﻘُﻮﻟُﻬَﺎ ﺛَﻠَﺎﺙَ ﻣَﺮَّﺍﺕٍ
উম্মুল মুমীনিন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তুমি কি এ রাত তথা শাবানের ১৫তম রজনী সম্পর্কে কিছু জান? তিনি আরজ করলেন এ রাতে কি রয়েছে? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এ রাতে যে সকল বনী আদম জন্মগ্রহন করবে তাদের নাম চূড়ান্ত করা হবে
আর যে সকল বনী আদম মৃত্যুবরন করবে তাদের নামও
লিপিবদ্ধ করা হবে। এ রাতে তদের পুরো বছরের আমলসমূহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে পেশ করা হবে আর এ রাতে তাদের রিজিক/জিবিকা নির্ধারণ করা হবে। অতপর তিনি আরজ করলেন, নিশ্চই আল্লাহর অনুগ্রহ ব্যতীত কেও জান্নাতে প্রবেশ
করতে পারবেনা, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চই আল্লাহর অনুগ্রহ ব্যতীত কেও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা তিনি এ বাক্য তিনবার বলেন। অতপর তিনি আরজ করলেন, আপনিও হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু
আলায়হি ওয়াসাল্লাম? রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাত মুবারক মাথা মুবারকের উপর রেখে ইরশাদ করেন, নিশ্চই আমি আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ করব।
এ বাক্য তিনি তিনবার ইরশাদ করেন।— বায়হাক্বী শরীফ-দাওয়াতে কবীর হাদীস
নং-৫৩০; মিশকাত শরীফ-১১৫ পৃঃ হাদীস নং-১৩০৫
(২)
ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ، ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻓَﻘَﺪْﺕُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺫَﺍﺕَ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ، ﻓَﺨَﺮَﺟْﺖُ ﺃَﻃْﻠُﺒُﻪُ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻫُﻮَ ﺑِﺎﻟْﺒَﻘِﻴﻊِ ﺭَﺍﻓِﻊٌ ﺭَﺃْﺳَﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ . ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻳَﺎ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔُ ﺃَﻛُﻨْﺖِ ﺗَﺨَﺎﻓِﻴﻦَ ﺃَﻥْ ﻳَﺤِﻴﻒَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻚِ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ؟ ﻗَﺎﻟَﺖْ، ﻗَﺪْ ﻗُﻠْﺖُ : ﻭَﻣَﺎ ﺑِﻲ ﺫَﻟِﻚَ، ﻭَﻟَﻜِﻨِّﻲ ﻇَﻨَﻨْﺖُ ﺃَﻧَّﻚَ ﺃَﺗَﻴْﺖَ ﺑَﻌْﺾَ ﻧِﺴَﺎﺋِﻚَ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ ﻳَﻨْﺰِﻝُ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻓَﻴَﻐْﻔِﺮُ ﻟِﺄَﻛْﺜَﺮَ ﻣِﻦْ ﻋَﺪَﺩِ ﺷَﻌَﺮِ ﻏَﻨَﻢِ ﻛَﻠْﺐٍ
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেনন, একরাতে আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে ঘরে পেলামনা বা তাঁর খোঁজে বের হলাম। তখন দেখলাম তিনি জান্নাতুল বাক্বী কবরস্থানে আসমানেকে মাথা মুবারক উত্তোলন করে অবস্থান করছেন। আমাকে সেখানে দেখে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন- হে আয়েশা! তুমি কি এ ভয় করছ যে, আল্লাহ তাঁর রসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম তোমার
প্রতি অবিচার করবে? তিনি আরজ করলেন আপনি বলছেন, এমন কিছু আসলে আমার মনে নেই বরং; আমি ধারণা করেছি যে, আপনি আপনার কোন স্ত্রীর হুজরায় তাশরীফ নিয়েছেন। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেন- নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা শা’বানের পনেরতম রাতে
প্রথম আসমানে তাশরীফ আনেন। অতঃপর বনী ক্বলব এর মেষগুলোর লোম এর সংখ্যার চেয়েও অধিক বান্দাকে ক্ষমা করে দেন।
— ইবনে মাজা শরীফ,হাদীস নং-১৩৮৯; জামে আত
তিরমিযি-৭৩৯; মুসনাদে আ’ব্দ বিন হুমায়দ-১৫০৯;
মুসান্নাফে আবী শায়বাহ-২৯৮৫৮; মুসনাদে
আহমদ-২৬০১৮,২৬০৬০; বায়হাক্বী ফাজায়িলুল
আওকাত-২৮; শো’আবুল ঈমান-৩৫৪৩,৩৫৪৪,৩৫৪৫; আন
নুযুল দারে ক্বুতনী-৯০; বগভী শরহুস সুন্নাহ-৯৯২;
সুয়ুতী তাফসীরে দুররে মানসুর, সুরা দুখান-৭:৪০২;
তাফসীরে রূহুল মা’আনী, সুরা দুখান,
১৮:৪২৩/১৩:১১০; তাফসীরে কাশশাফ, সুরা দুখান,
৪:২৭০; তাফসীরে কবীর, সুরা দুখান ২৭:৬৫৩ [1]
(৩)
ﻭﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻳَﻘْﻀِﻲ ﺍﻟْﺄَﻗْﻀِﻴَﺔَ ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ، ﻭَﻳُﺴَﻠِّﻤُﻬَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﺭْﺑَﺎﺑِﻬَﺎ ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ,,,
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- আল্লাহ তায়ালা শ’বানের পনেরতম রাতে সিদ্ধান্তসমুহ চুড়ান্ত করেন এবং শবে ক্বদরে তা বাস্তবায়নকারী
ফেরেশতাদের সোপর্দ করেন।
— তাফসীরে খাজিন ৪র্থ খণ্ড,পৃষ্ঠাঃ১১২
/১১৬;
তাফসীরে বগভী আল ইহিয়ায়ুত তুরাস, ৪:১৭৪, সুরা দুখান; তাফসীরে ক্বুরতুবী, ১৬:১২৭, সুরা দুখান;
ইবনে আ’দিল আল লুবাব ফি উলুমিল কিতাব-১৭:৩১১।
(৪)
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ” ﻳَﻄَّﻠِﻊُ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ﺇِﻟَﻰ ﺧَﻠْﻘِﻪِ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﻓَﻴَﻐْﻔِﺮُ ﻟِﻌِﺒَﺎﺩِﻩِ ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﺎﺛْﻨَﻴْﻦِ : ﻣُﺸَﺎﺣِﻦٍ، ﻭَﻗَﺎﺗِﻞِ ﻧَﻔْﺲٍ
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা শা’বানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে স্বীয় মাখলুকের প্রতি রহমতের দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। অতঃপর দু শ্রেণীর বান্দা ব্যতীত সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। তারা হল মুসলমান ভাইয়ের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ পোষণকারী এবং অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যাকারী।
— মুসনাদে আহমদ-৬৬৪২; আত তাগরীব; হায়ছামী
মাজমাউজ যাওয়ায়িদ-১২৯৬১; তাফসীরে রূহুল
মা’আনী, সুরা দুখান, ১৮:৪২৩/১৩:১১০ [4]
(৫)
ﻋَﻦْ ﻛَﺜِﻴﺮِ ﺑْﻦِ ﻣُﺮَّﺓَ : ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗﺎﻝ : ” ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ﻟِﺄَﻫْﻞِ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﺸْﺮِﻙَ ﻭَﺍﻟْﻤُﺸَﺎﺣِﻦَ .“ ” ﻫَﺬَﺍ ﻣُﺮْﺳَﻞٌ ”
হযরত কাসীর বিন মুররাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- শাবানের মধ্য রাত্রিতে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা মুশরিক ও কলহকারী ব্যতীত সকল দুনিয়াবাসীদের ক্ষমা করে
দেন।
— বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫০;
আলবানী সহীহ আত তারগীব ওয়াত তাহরিব-২৭৭০[5]
((৬)
ﻋَﻦْ ﻛَﺜِﻴﺮِ ﺑْﻦِ ﻣُﺮَّﺓَ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻳَﻄَّﻠِﻊُ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﻌِﺒَﺎﺩِ، ﻓَﻴَﻐْﻔِﺮُ ﻟِﺄَﻫْﻞِ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺇِﻟَّﺎ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻣُﺸْﺮِﻛًﺎ ﺃَﻭْ ﻣُﺸَﺎﺣِﻨًﺎ,,,
হযরত কাসীর বিন মুররাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- শাবানের মধ্যরাত্রিতে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং মুশরিক ও কলহকারী ব্যতীত সকল ক্ষমাপ্রার্থী দুনিয়াবাসীদের ক্ষমা করে দেন। — মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, কিতাবুস
সাওম-৭৯২৩; মুসান্নাফে আবী শায়বাহ-২৯৮৫৯; আন
নুযুল দারে ক্বুতনী-৮২, ৮৩, ৮৪; বায়হাক্বী শো’আবুল
ঈমান হাদীস নং ৩৫৫০, ৩৫৪৯
(৭)
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺛَﻌْﻠَﺒَﺔَ ﺍﻟْﺨُﺸَﻨِﻲِّ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : ” ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﺍﻃَّﻠَﻊَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﺧَﻠْﻘِﻪِ ﻓَﻴَﻐْﻔِﺮُ ﻟِﻠْﻤُﺆْﻣِﻦِ، ﻭَﻳُﻤْﻠِﻲ ﻟِﻠْﻜَﺎﻓِﺮِﻳﻦَ، ﻭَﻳَﺪَﻉُ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﺤِﻘْﺪِ ﺑِﺤِﻘْﺪِﻫِﻢْ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺪَﻋُﻮﻩُ,,,
হযরত আবু সা’অলাবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- যখন পনেরই শাবানের রাত হয়,আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং মুমিনদের ক্ষমা করে দেন ও কাফিরদের অবকাশ দেন। আর হিংসা বিদ্বেষ পোষণকারীদের আহ্বান করেন অবকাশ দেন (তাওবার জন্য) যতক্ষণ তাদের হিংসার কারণে তারা তার নিকট তওবা না করে।
— বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫১;
ইবনে আসেম আস সুন্নাহ-৫১০; তাবরানী আল মু’জামুল
কবীর ২২: ২২৩, ২২৪, হাদীস নং ৫৯০, ৫৯৩;
বায়হাক্বী আস সুনানুস সগীর-১৪২৬; ফাজায়িলুল
আওকাত-২৩; দার ক্বুতনী আন নুযুল-৭৮,৮১; হায়ছামী
মাজমাউজ যাওয়ায়িদ ১২৯৬২; আলবানী সহীহ আত
তারগীব ওয়াত তাহরিব ২৭৭১; সহীহুল জামে ৭৭১;
সুয়ুতী তাফসীরে দুররে মানসুর, সুরা দুখান-৭:৪০৩,
কানযুল উম্মাল-৩৫১৮৩ [6]
(৮)
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ – ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ :- ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ، ﻳَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻌِﺒَﺎﺩِﻩِ، ﺇِﻟَّﺎ ﻟِﻤُﺸْﺮِﻙٍ ﺃَﻭْ ﻣُﺸَﺎﺣِﻦٍ
হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন পনেরই শাবানের রাত হয়, তখন আল্লাহ তায়ালা সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন, মুশরিক ও অপর ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত।
— মুসনাদে বাযযার ১৬:১৬১ হাঃনং-৯২৬৮;
হায়ছামী মাজমাউজ যাওয়ায়িদ ১২৯৫৮; নুজহাতুল
মাজালিস ওয়া মুনতাখাবুন নাফাইস, বাব,ফাদলু
শ’বান ওয়া ফাদলু সালাতুত তাসবীহ, ১:১৪৬/১:১৬১ [7]
(৯)
ﺃﺭﺑﻊ ﻟﻴﺎﻟﻴﻬﻦ ﻛﺄﻳﺎﻣﻬﻦ ﻭﺃﻳﺎﻣﻬﻦ ﻛﻠﻴﺎﻟﻴﻬﻦ ﻳﺒﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻴﻬﻦ ﺍﻟﻘﺴﻢ ﻭﻳﻌﺘﻖ ﻓﻴﻬﻦ ﺍﻟﻨﺴﻢ ﻭﻳﻌﻄﻲ ﻓﻴﻬﻦ ﺍﻟﺠﺰﻳﻞ : ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻘﺪﺭ ﻭﺻﺒﺎﺣﻬﺎ، ﻭﻟﻴﻠﺔ ﻋﺮﻓﺔ ﻭﺻﺒﺎﺣﻬﺎ، ﻭﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻭﺻﺒﺎﺣﻬﺎ ﻭﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﻭﺻﺒﺎﺣﻬﺎ . ” ﺍﻟﺪﻳﻠﻤﻲ – ﻋﻦ ﺃﻧﺲ
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, চারটি রাত এমন রয়েছে যেগুলোর ফযীলত তাদের দিনের ন্যায় দিনের ফযীলত রাতের ন্যায়। যাতে আল্লাহ তা’আলা বান্দাহদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেন, তাঁর বান্দাদের মুক্ত করেন এবং অফুরন্ত নি’আমত প্রদান করেন। তা হল- কদরের রাত ও তার পরবর্তী দিন, আরাফার রাত ও তার পরবর্তী দিন,
শাবানের মধ্য রাত্রি (শবে বরাত) ও তার পরবর্তী
দিন, জুম’আর রাত ও তার পরবর্তী দিন।
— দায়লামি, কানযুল উম্মাল-৩৫২১৪; সুয়ুতী জামেউল
আহাদীস-৩০৮০
(১০)
ﻋَﻦْ ﻋُﺜْﻤَﺎﻥَ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺍﻟْﻌَﺎﺹِ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : ” ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﻧَﺎﺩَﻯ ﻣُﻨَﺎﺩٍ : ﻫَﻞْ ﻣِﻦْ ﻣُﺴْﺘَﻐْﻔِﺮٍ ﻓَﺄَﻏْﻔِﺮَ ﻟَﻪُ، ﻫَﻞْ ﻣِﻦْ ﺳَﺎﺋِﻞٍ ﻓَﺄُﻋْﻄِﻴَﻪُ ﻓَﻠَﺎ ﻳَﺴْﺄَﻝُ ﺃَﺣَﺪٌ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺃُﻋْﻄِﻲَ ﺇِﻟَّﺎ ﺯَﺍﻧِﻴَﺔٌ ﺑِﻔَﺮْﺟِﻬَﺎ ﺃَﻭْ ﻣُﺸْﺮِﻙٌ
হযরত উসমান বিন আবীল আ’স রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন-রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,যখন পনেরই শাবানের রাত হয়,তখন আহবানকারী আহবান করবে এই বলে, আছে কেউ মুক্তিকামী গুনাহ হতে ? তাকে ক্ষমা করা হবে। কেউ আছে যে কিছু চাইবে তাকে
তা দান করা হবে। প্রত্যেক কামনাকারীকে প্রদান করা হবে শুধুমাত্র মুশরিক ও ব্যভিচারকারী মহিলা
ব্যতীত।
— বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫৫;
ফাজায়েলু আওকাত-২৫; কানযুল উম্মাল-৩৫১৭৮;
সুয়ুতী তাফসীরে দুররে মানসুর, সুরা দুখান-৭:৪০৩
(১১)
ﻋَﻦْ ﻋَﻄَﺎﺀِ ﺑْﻦِ ﻳَﺴَﺎﺭٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺗُﻨْﺴَﺦُ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ ﺍﻟْﺂﺟَﺎﻝُ، ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞَ ﻟﻴَﺨْﺮُﺝُ ﻣُﺴَﺎﻓِﺮًﺍ، ﻭَﻗَﺪْ ﻧُﺴِﺦَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺄَﺣْﻴَﺎﺀِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﺄَﻣْﻮَﺍﺕِ، ﻭَﻳَﺘَﺰَﻭَّﺝُ ﻭَﻗَﺪْ ﻧُﺴِﺦَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺄَﺣْﻴَﺎﺀِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﺄَﻣْﻮَﺍﺕِ
আতা বিন ইয়াসার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, শা’বানের মধ্য রজনীতে (শবে বরাতে) মানুষের হায়াত পূর্ণ করা হয়। অথচ লোকটি ভ্রমণকারী হিসেবে বের হয়েছে, এমতাবস্থায় তার হায়াত পূর্ণ করা হয়েছে এবং মৃত্যু তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এবং বিবাহ করেছে এমতাবস্থায় তার হায়াত শেষ করা হয়েছে ও মৃত্যু তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। অর্থাৎ জীবন, মৃত্যু ইত্যাদি এ রাতে নির্ধারিত হয়।
— মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, কিতাবুস সাওম-৭৯২৫;
সুয়ুতী তাফসীরে দুররে মানসুর, সুরা দুখান-৭:৪০৩
(১২)
ﻋَﻦ ﻋِﻜْﺮِﻣَﺔ } ﻓِﻴﻬَﺎ ﻳﻔﺮﻕ ﻛﻞ ﺃَﻣﺮ ﺣَﻜِﻴﻢ { ﻗَﺎﻝَ : ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔ ﺍﻟﻨّﺼْﻒ ﻣﻦ ﺷﻌْﺒَﺎﻥ ﻳﺒﺮﻡ ﺃَﻣﺮ ﺍﻟﺴّﻨﺔ ﻭﻳﻨﺴﺦ ﺍﻟْﺄَﺣْﻴَﺎﺀ ﻣﻦ ﺍﻟْﺄَﻣْﻮَﺍﺕ ﻭَﻳﻜْﺘﺐ ﺍﻟْﺤَﺎﺝ ﻓَﻠَﺎ ﻳُﺰَﺍﺩ ﻓﻴﻬﻢ ﻭَﻟَﺎ ﻳﻨﻘﺺ ﻣِﻨْﻬُﻢ ﺃﺣﺪ
হযরত ইকরামা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি সুরা দুখানের আয়াত (এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ কাজের ফয়সালা দেওয়া হয়। আয়াত-৪)এর তাফসীরে বলেন, শাবানের মধ্য রজনীতে আল্লাহ তায়ালা পরবর্তী বছরে যে সকল ঘটনা সংগঠিত হবে (বাজেট) তা লিপিবদ্ধ করবেন যারা মৃত্যু বরণ করবে তাদের মধ্য থেকে কারো কারো হায়াত বৃদ্ধি করা হবে এবং যারা আল্লাহর পবিত্র গৃহের তাওয়াফ করবে অর্থাৎ হজ্জ্ব আদায় করবে তাদের নাম লিপিবদ্ধ করা হবে। অতঃপর এদের মধ্যে কোন কিছু বৃদ্ধি পাবে না এবং তাদের মধ্য হতে কমতিও হবে না।
— সুয়ুতী আদ দুররুল মান্সুর,সুরা দুখান,৭:৪০১; শিহাব
উদ্দীন আলুসী রুহুল মা’আনী, সুরা দুখান,১৩:১১২/
১৮:৪২৭; ইবনে জারীর তাবারী তাফসীরে ত্ববারী
জামেউল বয়ান, সুরা দুখান,২২:১০; তাফসীরে
সা’লাবী ৮:৩৪৯; তাফসীরে বগভী, সুরা দুখান ৪:১৭৩;
তাফসীরে মাযহারী ৮:৩৬৮
(১৩)
ﻋﻦ ﻋﺜﻤﺎﻥ ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺍﻟﻤُﻐﻴﺮﺓ ﺑﻦ ﺍﻷﺧﻨﺲ، ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ”: ﺗُﻘْﻄَﻊُ ﺍﻵﺟﺎﻝُ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒﺎﻥ ﺇﻟﻰ ﺷَﻌْﺒﺎﻥَ ﺣﺘﻰ ﺇﻥ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞَ ﻟَﻴَﻨْﻜِﺢُ ﻭَﻳُﻮﻟَﺪُ ﻟَﻪْ ﻭَﻗَﺪْ ﺧَﺮَﺝَ ﺍﺳﻤُﻪُ ﻓِﻲ ﺍﻟﻤَﻮْﺗَﻰ
উসমান বিন মুগীরাহ বিন আখফাশ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, শবে বরাতে এক শা’বান হতে আর এক শা’বানের মধ্যকার হায়াত কর্তন করা হয়। অথচ মানুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় সন্তান সন্ততি জন্ম দেয় এমতাবস্থায় তার নাম মৃত্যুর তালিকায় নেয়া হয়।
— বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫৮;
শিহাব উদ্দীন আলুসী রুহুল মা’আনী, সুরা
দুখান,১৩:১১২/১৮:৪২৭; ইবনে জারীর তাবারী
তাফসীরে ত্ববারী জামেউল বয়ান, সুরা
দুখান,২২:১০; কানযুল উম্মাল-৪২৭৮০; তাফসীরে
সা’লাবী ৮:৩৪৯; তাফসীরে খাজিন ৪:১১২/১১৬;
শওকানী ফাতহুল ক্বাদীর, সুরা দুখান,৪:৬৫৫; সুয়ুতী
জামেউল আহাদীস-১০৯১৭; দায়লামী ২:৭৩-২৪১০;
তাফসীরে বগভী সুরা দুখান ৪:১৭৪; তাফসীরে
মাযহারী ৮:৩৬৮
হাদিসটি হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতেও বর্ণিত হয়েছে — সুয়ুতী আদ দুররুল মান্সুর, সুরা দুখান,৭:৪০১;
শওকানী ফাতহুল ক্বাদীর, সুরা দুখান ৪:৬৫৫; মুসনাদে
দায়লামী-২৪১০
(১৪)
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﺗﻘﻀﻰ ﺍﻷﻗﻀﻴﺔ ﻛﻠﻬﺎ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻭﺗﺴﻠﻢ ﺇﻟﻰ ﺃﺭﺑﺎﺑﻬﺎ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﺴﺎﺑﻊ ﻭﺍﻟﻌﺸﺮﻳﻦ ﻣﻦ ﺷﻬﺮ ﺭﻣﻀﺎﻥ,,
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়ায়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, শা’বানের মধ্য রজনীতে যাবতীয় বিষয়ের ফয়সালা করা হয় এবং উহা রমযানের ২৭ তারিখ ক্বদরের রাতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দায়িত্বশীলদের নিকট সোপর্দ করা হয়।
— শিহাব উদ্দীন আলুসী রুহুল মা’আনী,সুরা
দুখান,১৩:১১২/১৮:৪২৭
(১৫)
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ : ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻳَﻘْﻀِﻲ ﺍﻟْﺄَﻗْﻀِﻴَﺔَ ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒَﺎﻥَ، ﻭَﻳُﺴَﻠِّﻤُﻬَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﺭْﺑَﺎﺑِﻬَﺎ ﻓِﻲ ﻟَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِ
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়ায়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নিশ্চই আল্লাহ্ তা’আলা শা’বানের মধ্য রজনীতে যাবতীয় বিষয়ের ফয়সালা করেন এবং উহা ক্বদরের রাতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দায়িত্বশীলদের নিকট সোপর্দ করেন। — তাফসীরে বগভী, সুরা দুখান ৪:১৭৪; তাফসীরে
খাযিন, সুরা দুখান ৪:১১৬, আল লুবাব ফি উলুমিল
কিতাব ১৭:৩১১; তাফসীরে মাযহারী ৮:৩৬৮
(১৬)
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺃﻣﺎﻣﺔ ﺍﻟﺒﺎﻫﻠﻲ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ” ﺧَﻤْﺲُ ﻟَﻴﺎﻝٍ ﻟَﺎ ﺗُﺮَﺩُّ ﻓِﻴﻬِﻦَّ ﺍﻟﺪَّﻋْﻮَﺓُ ﺃﻭَّﻝُ ﻟَﻴْﻠَﺔٍ ﻣِﻦْ ﺭَﺟَﺐٍ ﻭَﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟﻨِّﺼْﻒِ ﻣِﻦْ ﺷَﻌْﺒﺎﻥَ ﻭَﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻭَﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟﻔِﻄْﺮِ ﻭَﻟَﻴْﻠَﺔُ ﺍﻟﻨَّﺤْﺮِ ”
হযরত আবু উমামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন এমন পাঁচটি রাত আছে যে রাতগুলোয় দু’আ ফেরত হয়না। ওইগুলো হল-জুমু’আর রাত,রজব মাসের প্রথম রাত,শ’বান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত এবং দুই ঈদের রাত অর্থাৎ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাত। — সুয়ুতী জামেউল আহাদীস-১১৯৭৯; দায়লামী
তথ্যসূত্র
1. ↑ হাদিসটি ভিন্ন সূত্রে সহীহ, বায়হাক্বী একে
মুরসাল বলেন
2. ↑ হাসান সহীহ, এর বর্ণনাকারী গণও
নির্ভরযোগ্য। ইবনে হিব্বান একে সহীহ বলেছেন
3. ↑ সহীহ লিগাইরিহি
4. ↑ হাদিসটি সহীহ , রাবীর স্তরে ইবনে
লাহীয়াহ ব্যতীত বাকী সবাই নির্ভরযোগ্য ।
5. ↑ সহীহ লিগায়রিহি, বায়হাক্বী একে মুরসাল
বলেছেন ।
6. ↑ সহীহ লিগাইরিহি, বায়হাক্বী মুরসাল বলে
উল্লেখ করেন।
7. ↑ মারফু, এর সনদে হিশাম বিন আব্দুর রহমান
অজ্ঞাত এ ছাড়া বাকীরা নির্ভরযোগ্য।
8. ↑ হাদীসটি মুরসাল।
Comments
Post a Comment