আল্লাহ তায়ালা কাদের সন্নিকটে ও সঙ্গী হয়ে আছেন।

আল্লাহ তায়ালা কখন কাদের কাছে খুবই দ্রুত এগিয়ে আসেনঃ-
&******************************************&
সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে মানুষকে আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। এ কারণেই তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। যারা দুনিয়াতে তার বিধান বাস্তবায়নের প্রতিনিধিত্ব করবেন। অথবা দুনিয়ায় আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে মানুষ আল্লাহকে যেভাবে স্মরণ করবে, আল্লাহ তাআলাও মানুষকে সেভাবেই স্মরণ করবেন। মানুষ আল্লাহকে যেমন ধারণা করবেন, আল্লাহ তাআলাও তার জন্য সেরকম হয়ে যাবেন। মানুষ যেভাবে আল্লাহর দিকে ছুটবেন, আল্লাহ বান্দার দিকে তার চেয়ে বেশি গতিতে এগিয়ে আসবেন। এজন্য আল্লাহ তায়ালা বলেন, 
فَاذۡكُرُوۡنِىۡٓ اَذۡكُرۡكُمۡ وَاشۡکُرُوۡا لِىۡ وَلَا تَكۡفُرُوۡنِ,,,
‘বান্দা তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ করবো। আর তোমরা আমার কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর এবং আমার অকৃতজ্ঞ হইও না।’ সূরা বাক্বারাহ, আয়াত ১৫২।
হাদিসে পাকে প্রিয়নবি ঘোষণা করেন, বান্দা আল্লাহর সঙ্গে যেরূপ ধারণা করে, কিংবা যে পরিবেশে যে অবস্থায় আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি করে কিংবা তার বিধান পালন করে, আল্লাহ সে বান্দার ইবাদত-আমল অনুযায়ী তার চেয়ে উত্তম পরিবেশে সে বান্দাকে স্মরণ করেন।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, আল্লাহা তাআলা বলেন-
‘আমি আমার বান্দার সঙ্গে আমার প্রতি ধারণা অনুযায়ী ব্যবহার করি। যখন সে আমাকে স্মরণ করে তখন আমি তার সঙ্গে থাকি। অনন্তর যদি সে আমাকে মনে মনে স্মরণ করে আমিও তাকে মনে মনে স্মরণ করি।
আর যদি সে কোনো মাহফিলে আমার স্মরণ করে, তবে আমি তার চেয়ে উত্তম মাহফিলে (নিষ্পাপ ফেরেশতাদের মাহফিলে) তার স্মরণ করি। সে যদি আমার দিকে এক বিঘৎ অগ্রসর হয়, তবে আমি তার দিকে এক হাত (দুই বিঘৎ) অগ্রসর হই।
আর সে যদি আমার দিকে একহাত অগ্রসর হয় তবে আমি তার দিকে একগজ (দুই হাত) অগ্রসর হই।
সে যদি আমার দিকে হেঁটে হেঁটে আসে আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ, বায়হাকি)
উল্লেখিতে হাদিসে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহকে স্মরণকারী বান্দার বিষয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত প্রদান করেছেন-

প্রথমতঃ আল্লাহ বান্দার সঙ্গে বান্দার ধারণা অনুযায়ী ব্যবহার করে থাকেন। সুতরাং বান্দার উচিত সব সময় আল্লাহর কাছে তার দয়া ও অনুগ্রহ পাওয়ার আশা পোষণ করা। এ জন্য আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে বান্দাকে সর্বাবস্থায় আশ্বস্ত করে বলেছেন-
قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا ۚ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ,,
বলুন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ; আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ থেকে হতাশ হয়ো না, নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ সূরা যুমার, আয়াত ৫৩।
আবার মানুষ অন্যায় কাজে লিপ্ত হওয়ার পর আল্লাহকে স্মরণ করলে কিংবা ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি অপরাধীর অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন। তবে যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করবে তাদেরকে তিনি ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ তায়ালা বলেন-
إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَىٰ إِثْمًا عَظِيمًا,,,
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে অংশীদার স্থপনকারীর অপরাধ ক্ষমা করবেন না, ইহা (শিরক) ব্যতিত যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।’ সূরা নিসা, আয়াত ৪৮।
সুতরাং আল্লাহর সঙ্গে শিরক তথা অংশীদার স্থপন না করে তার অবাধ্য না হয়ে তাকে স্মরণ করা কিংবা তার হুকুম আহকাম গুলো যথাযথ পালন করা তথা তার সার্বিক জিকির-আজকারে নিজেকে নিয়োজিত রাখাই মুমিন মুসলমানের একান্ত কাজ।

দ্বিতীয়তঃ বান্দা যখন আল্লাহকে স্মরণ করে, আল্লাহ তখন শুধু বান্দাকে স্মরণ করেই থেমে যান না বরং হাদিসের আলোকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ বান্দার সঙ্গে থাকেন। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيبُواْ لِي وَلْيُؤْمِنُواْ بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ
আর আমার বান্দারা যখন আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে। [ সুরা বাকারা ২:১৮৬ ]
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
وَنَحۡنُ اَقۡرَبُ اِلَيۡهِ مِنۡ حَبۡلِ الۡوَرِيۡدِ,,,
আমি তার ঘাড়ের শাহরগের চেয়েও বেশী কাছে আছি। সূরা কফ আয়াত ১৬।

হাদীস শরীফে প্রিয়নবি ঘোষণা করেন-
বান্দা যখন আমাকে স্মরণ করে, যতক্ষণ আমার স্মরণ বা জিকির বান্দার ঠোঁটে থাকে অর্থাৎ আমার স্মরণে বান্দার ঠোঁট যতক্ষণ নড়তে থাকে, আমি ততক্ষণ তার সঙ্গে থাকি।’ জিকিরকারী বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার বিশেষ দৃষ্টি থাকে এবং তার ওপর রহমত বর্ষণ হতে থাকে।

তৃতীয়তঃ আল্লাহ তাআলা বান্দার ব্যাপারে ফেরেশতাদের মাহফিলে আলোচনা করেন। সে বান্দাকে নিয়ে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মাহফিলে গর্ব প্রকাশ করে মানুষ সৃষ্টিতে ফেরেশতাদের আপত্তির কথা তুলে ধরেন।

চতুর্থতঃ বান্দা আল্লাহর বিধান পালনে কিংবা তার ইবাদত- বন্দেগিতে যত বেশি মনোযোগী হয়, আল্লাহ তাআলা সে বান্দার প্রতি তারচেয়ে বেশি মনোযোগের সঙ্গে অনুগ্রহ দান করেন। বান্দার নিকটবর্তী হওয়া কিংবা বান্দার দিকে দৌড়ে আসার মর্মও এটি।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জেনে রেখো! যদি সব সৃষ্টি একত্র হয়ে তোমার কোনো উপকার করতে চায়, তবু তারা আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া কখনই তোমার উপকার করতে পারবে না। আর যদি সব সৃষ্টি একত্র হয়ে তোমার কোনো ক্ষতি করতে চায়, তবু তারা আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া কখনই তোমার ক্ষতি করতে পারবে না। কলম তুলে নেওয়া হয়েছে এবং দপ্তরসমূহ শুকিয়ে গেছে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৫১৬)।
আলোচ্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) মুমিনদের আল্লাহর সান্নিধ্য ও নৈকট্য লাভে উৎসাহিত করেছেন। যেন তারা ঈমান, ইখলাস (সততা), ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা, সান্নিধ্য ও রহমতের দৃষ্টি লাভে সক্ষম হয়। পার্থিব জীবনে তারা কখনো আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত না হয়।

আল্লাহ বান্দার সঙ্গে থাকার অর্থ কি?
সঙ্গ বা সঙ্গে থাকা বোঝাতে আরবি ভাষায় ‘মায়িয়্যাত’ শব্দ ব্যবহৃত হয়। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিশ্বাস অনুযায়ী ‘মায়িয়্যাত’ মহান আল্লাহর একটি গুণ। তবে আল্লাহর সঙ্গে থাকা কোনো সৃষ্টির সঙ্গে থাকার মতো নয়। কেননা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ,,,
‘কোনো কিছুই তার মতো নয়, তিনি সব শোনেন এবং দেখেন।’ 
(সুরা আশ-শুরা, আয়াত : ১১)।
বিশেষজ্ঞ আলেমরা আল্লাহর সঙ্গে থাকার দুটি অর্থ করেন। 
এক. সাধারণ অর্থে আল্লাহর সঙ্গে থাকা। তাহলো আল্লাহ তাঁর জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও ক্ষমতার মাধ্যমে সব সৃষ্টির সঙ্গে থাকেন।
দুই. বিশেষ অর্থে সঙ্গে থাকা। আর তাহলো সতর্কীকরণ, সাহায্য, সহযোগিতা ও সুযোগ দানের মাধ্যমে সঙ্গে থাকা। কোরআন ও হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী আল্লাহ নবী-রাসুল, মুমিন ও তার নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দাদের সঙ্গে দয়া, অনুগ্রহ ও সহযোগিতার মাধ্যমে সঙ্গে থাকেন। ওহি ও ইলহামের মাধ্যমে তাদের সতর্ক করেন।

আল্লাহর যাদের সঙ্গে থাকেনঃ-
পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে ‘আল্লাহর বান্দাদের সাথে থাকা’র বিষয়টি বিবৃত হয়েছে। যেমন,
১. আল্লাহভীরু ও দয়াশীল মানুষঃ- আল্লাহ মুত্তাকি ও দয়াশীল মানুষের সঙ্গে থাকার ঘোষণা দিয়ে বলেন,
إِنَّ اللّهَ مَعَ الَّذِينَ اتَّقَواْ وَّالَّذِينَ هُم مُّحْسِنُونَ,,,
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন যারা আল্লাহভীরু ও অনুগ্রহকারী।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ১২৮)

২. আল্লাহর পথে আহ্বানকারীঃ- যারা মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করে আল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকেন। আল্লাহর মহান দুই নবী মুসা ও হারুন (আ.)-কে ফেরাউনের কাছে দ্বিনি দাওয়াত নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, 
قَالَ لَا تَخَافَا إِنَّنِي مَعَكُمَا أَسْمَعُ وَأَرَى,,,
‘তোমরা ভয় পেয়ো না, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সঙ্গে আছি, আমি শুনি ও দেখি।’ (সুরা তাহা, আয়াত : ৪৬)

৩. বিপদগ্রস্ত মুমিনঃ- যখন কোনো মুমিন বিপদগ্রস্ত হয় এবং তারা আল্লাহর সাহায্য কামনা করে আল্লাহ সাহায্যের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে থাকেন। ইরশাদ হয়েছে, 
فَلَمَّا تَرَاءَى الْجَمْعَانِ قَالَ أَصْحَابُ مُوسَى إِنَّا لَمُدْرَكُونَ (61) قَالَ كَلَّا إِنَّ مَعِيَ رَبِّي سَيَهْدِينِ (62)
‘যখন দুই দল পরস্পরকে দেখল, মুসার অনুসারীরা বলল, নিশ্চয়ই আমরা ধরা পড়ে যাব। মুসা বলল, কখনোই না। নিশ্চয়ই আমার প্রভু আমার সঙ্গে আছেন। তিনি আমাকে পথ দেখাবেন।’ (সুরা আশ-শুরা, আয়াত ৬১, ৬২)

৪. আল্লাহর পথে হিজরতকারীঃ- আল্লাহর নির্দেশে মহানবী (সা.) যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করছিলেন, তখন আবু বকর (রা.) শত্রুর হাতে ধরা পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন- সে সময় সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, 
إِذْ هُمَا فِي الْغَارِ إِذْ يَقُولُ لِصَاحِبِهِ لاَ تَحْزَنْ إِنَّ اللّهَ مَعَنَا,,,
‘যখন তারা গুহায় ছিল, তখন সে তার সঙ্গীকে বলেছিল, বিষণ্ন হয়ো না। আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা তাওবা, আয়াত ৪০)

৫. ধৈর্যশীল ব্যক্তিঃ- যারা দ্বিনের ওপর চলতে গিয়ে বিপদের শিকার হয় এবং ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকেন। আল্লাহ বলেন, 
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ,,, 
‘হে মুমিনরা! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত :  ১৫৩)

আল্লাহ পাপীদেরও সঙ্গে থাকেনঃ- কোনো মানুষ আল্লাহর জ্ঞান ও ক্ষমতার বাইরে নয়। সুতরাং কেউ পাপ কাজ করলেও আল্লাহ তার সম্মুখে থাকেন। আল্লাহ বলেন, 
يَسْتَخْفُونَ مِنَ النَّاسِ وَلَا يَسْتَخْفُونَ مِنَ اللَّهِ وَهُوَ مَعَهُمْ إِذْ يُبَيِّتُونَ مَا لَا يَرْضَى مِنَ الْقَوْلِ وَكَانَ اللَّهُ بِمَا يَعْمَلُونَ مُحِيطًا,,,
"তারা মানুষের কাছে পাপ গোপন করে, কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে গোপন করতে পারে না। কারণ তিনি তাদের সঙ্গে রয়েছেন, যখন তারা রাতে এমন বিষয়ে পরামর্শ করে যাতে আল্লাহ সম্মত নন। তারা যা কিছু করে সবই আল্লাহর আয়ত্তাধীন।" (৪:১০৮)
অন্য আয়াতে ষড়যন্ত্রকারীদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
 مَا يَكُونُ مِنْ نَجْوَى ثَلَاثَةٍ إِلَّا هُوَ رَابِعُهُمْ وَلَا خَمْسَةٍ إِلَّا هُوَ سَادِسُهُمْ وَلَا أَدْنَى مِنْ ذَلِكَ وَلَا أَكْثَرَ إِلَّا هُوَ مَعَهُمْ أَيْنَ مَا كَانُوا ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ,,,
‘তিন ব্যক্তির মধ্যে এমন কোনো গোপন পরামর্শ হয় না যেখানে তিনি চতুর্থজন হিসেবে উপস্থিত থাকেন না এবং পাঁচ ব্যক্তির মধ্যেও হয় না যেখানে তিনি ষষ্ঠজন হিসেবে উপস্থিত থাকেন না। তারা এর চেয়ে কম হোক বা বেশি তিনি তো তাদের সঙ্গেই আছেন; তারা যেখানেই থাকুক না কেন।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত : ৭)।

আল্লাহকে সঙ্গে পেতে হলেঃ- আল্লাহকে সঙ্গে পেতে হলে আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় করতে হবে। জীবনের সর্বত্র তাঁর বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালন করতে এবং তার সৃষ্টির সঙ্গে বিনম্র আচরণ করতে হবে। আর কখনো আল্লাহ বিপদ-আপদ দ্বারা পরীক্ষা নিলে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। কারণ আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, 
إِنَّ اللّهَ مَعَ الَّذِينَ اتَّقَواْ وَّالَّذِينَ هُم مُّحْسِنُونَ,,,
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন যারা আল্লাহভীরু ও অনুগ্রহকারী।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ১২৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার কঠিন বিপদের সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া কবুল হওয়ার আনন্দ পেতে চায় সে যেন তার সচ্ছলতার সময় বেশি বেশি দোয়া করে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৮২)।

আল্লাহ যখন সঙ্গে থাকেনঃ- কাতাদাহ (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করবে আল্লাহ তার সঙ্গী হবেন, যার সঙ্গী আল্লাহ হবেন, তার সঙ্গী এমন একটি দল হবে যাদের পরাজিত করা যায় না (ফেরেশতা), এমন পাহারাদার হবেন যিনি ঘুমান না এবং এমন পথপ্রদর্শক হবেন যিনি কখনো পথভ্রষ্ট হন না।’ (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম : ২০/১৪)।
اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ,,,
আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলমানকে তার বিধি-বিধান পালনে ইবাদত-বন্দেগিতে যথাযথভাবে তাকে স্মরণ করার তাওফিক দান করুন। তার রহমত বরকত মাগফেরাত ও কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।



Comments